মানুষের মেজাজ নষ্ট করে এমন আটটি বিষয় Leave a comment








১। নিজেকে অন্যের সাথে তুলোনা করা। 


এখন এমন যুগ পড়েছে যে, আপনি যেখানেই থাকুননা কেন, সেখানেই আছে ফেসবক এবং মিডিয়া। আর ফেসবুকে বা মিডিয়ায় দেখবেন আপনার পরিচিত অপরিচিত মানুষের সুখী সুখী ও হাস্যোজ্বল সেলফি। কোন কোন ছবি আবার ফটোশপ দিয়ে এডিট করা, এক কথায় সেই রকম। কিন্তু মজার বিষয় হল, আপনার অবচেতন মনে এই ছবি গুলো একধরনের প্রভাব ফেলতে শুরু করে। আপনি নিজেকে মনের অজান্তেই সেই তথাকথিত ছবিগুলোর সাথে তুলনা করতে শুরু করেন। তাদের কি আছে, আপনার কি আছে। তাদের আছে অথচ আপনার নেই এমন সব ব্যাপার।যদিও আপনি ভালোভাবেই জানেন যে, সেই ছবিগুলোর বাস্তবতা কতোটা ঠুঙ্কো।  

টিপ্‌সঃ মহানবী (সাঃ) এরশাদ করেন, “তোমাদের মাঝে কেউ যদি অপরকে নিজের থেকে ধনসম্পদ বা অবয়বে অপেক্ষাকৃত ভালো দেখে, তাহলে তার উচিৎ হবে  তার থেকে নীচে কারো দিকে তাকাতে। ” এই হাদিসের আলোকে সহজ সমাধান হল, ফেসবুক বা মিডিয়ার এই সমস্ত ছবি এড়িয়ে চলা। কিন্তু তা কি আমাদের পক্ষে সহজ? না, সহজ না। তাহলে উপায়?!! উপায় হল যখনই এরকম কিছু চোখে পড়বে, তখন নিজের চেয়ে নিচে আছে এমন কারো দিকে তাকাতে হবে। তাহলেই মানসিক শান্তি পাওয়া যাবে সেই সাথে আল্লাহর অনুগ্রহের প্রশংসা আদায় করা সম্ভব হবে।  

২। সামাজিক যোগাযোগের সাইটে অধিক সময় দেয়া।


সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সামাজিক যোগাযোগের সাইটে বেশী সময় পার করেন, তারা নিজেদের জীবনে  সুখবোধ কমে যায়। নিজেকে নিয়ে তারা সুখী থাকতে পারেননা।
টিপ্‌সঃ এক্ষেত্রে যা করতে হবে, তা হলো, সামাজিক সিট গুলোতে এমন কিছুর মাধ্যমে সময় দেয়া যাতে অন্যের উপকার হয়। যেমনঃ হাদিস পোস্ট করা, অথবা পজিটিভ্‌ কোন কিছু লেখা যা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি করে। এটা আপনার মনকে অনেক প্রশান্তিতে রাখবে ইন্‌শাল্লাহ।  

৩। নেতিবাচক মানসিকতার লোকজনের সাথে বেশী সময় কাটানো।



আপনি একজন সংক্রামক রোগীর সাথে যদি অনেকসময় ধরে থাকেন, তাহলে স্বভাবতই আপনিও সেই রোগে আক্রান্ত হবেন। মানুষের আবেগও তাই। বরং এক্ষেত্রে সংক্রমিত হবার সম্ভাবনা আরো বেশী। যারা প্রতিনিয়ত শুধু না শোকরী এবং অভিযোগ করে, তাদেরকে এড়িয়ে চলুন। যদি এড়ানো না যায়, তাহলে চুপ না থেকে তাদের কথার পিঠে ইতিবাচক কথা দিয়ে সাড়া দিন। সুরা আসরের অর্থ মনে করুন।  

৪) অগোছালো থাকা।


যখন আপনার বাসা কিংবা পড়ার টেবিল অগোছালো থাকে, তখন স্বভাবতই আপনার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। পরিপাটী করে রাখা টেবিল বা যে কোন কিছুই আপনার মেজাজ ভালো রাখে।
টিপ্‌সঃ মনে রাখবেন, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা হল ঈমানের অর্ধেক। একথাটি মাথায় রেখে আপনি আপনার বাসা , আসবাব ইত্যাদি পরিস্কার ও পরিপাটী করে রাখবেন। এটা আপনাকে চনমনে রাখবে।

৫) ঘুমাতে যাবার আগে কম্পিউটার বা স্মার্ট ফোনে কাজ করা।


গবেষণায় পাওয়া গেছে, ঘুমাতে যাবার আগে ট্যাব, স্মার্ট ফোন কিংবা কম্পিউটারে কাজ করলে তা মানব শরীরে মেলাটোনিন উৎপাদন ব্যাহত করে। আর মেলাটোনিনই মানুষের মেজাজ নিয়ন্ত্রনে বিরাট ভুমিকা পালন করে থাকে। আর এটি একমাত্র অন্ধকারেই উৎপাদন হয়।
টিপ্‌সঃ শুতে যাবার অন্তত ১৫ মিনিট আগে থেকে ইলেক্ট্রনিক গেজেট পরিহার করুন। সুন্নাহ অনুযায়ী ঘুমাতে যাবার আগের দোয়াগুলো পড়ুন। ভিজিট করতে পারেনঃ http://www.makedua.com/display_dua.php?sectionid=28

৬) রাতে দেরী করে ঘুমানো।


আমরা আমাদের রাজ্যের কাজ নিয়ে রাতে ব্যস্ত হয়ে যাই। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা রাতে দেরী করে ঘুমায়, তারা অনেকসময়ই বিষণ্ণতায় ভোগে। কিন্তু আমারা করি কি, রাতে রিলাক্স করার নামে শুয়ে শুয়ে মোবাইল নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে থাকি। এতা অত্যন্ত ক্ষতিকর।
টিপ্‌সঃ আল্লাহপাক রাতকে মানুষের বিশ্রামের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তাই যেভাবেই হোক রাতে তাড়াতাড়ি শুতে যান। কঠোরভাবে এটা পালন করুন। দেখবেন, জীবন বদলে যাবে।

৭) মাঝে মাঝে কিছুটা অবসর নেয়া।


আমরা সবাই চাই আমাদের জীবনের প্রত্যেকটা মুহুর্ত আমলে ব্যয় করতে। কিন্তু অনেক সময় এতে একঘেয়েমি বা অবসাদ সৃষ্টি হয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে তা আমাদের মেজাজে প্রভাব ফেলে।
টিপ্‌সঃ হালা বিনোদনের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে অনেক হাদীস আছে।  মাঝে মাঝে হালাল বিনোদনের মাধ্যমে সময় কাটান।

৮) খাদ্যাভ্যাস।


কিছু কিছু খাবার যেমন চিপ্‌স, ফ্রাই মানুষের মস্তিষ্কে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এসমস্ত খাবারে থাকে ওমেগা-৬, যা এর জন্য দায়ী।
টিপ্‌সঃ এই আয়াতের দিকে খেয়াল করুন, “হে মানব মন্ডলী, পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র বস্তু-সামগ্রী ভক্ষন কর। আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। সে নিঃসন্দেহে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।” (২:১৬৮) । তাই শুধু হালাল নয়, পবিত্র ও নির্ভেজাল খাবার খাওয়ার প্রতিও নিজেকে নিবেদন করুন। গবেষণায় দেখা গেছে, ওমেগা-৩ মানুষের মেজাজ কে সুন্দর রাখে। আর ওমেগা-৩ পাওয়া যায় এমন খবার হলো, স্যালমন, গরুর মাংস, সয়াবিন, চিংড়ী, ফুলকপি ইত্যাদি।



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

SHOPPING CART

close